স্বদেশ ডেস্ক:
রাজধানী ঢাকা থেকে পেঁয়াজ বিক্রি করে রাজবাড়ী ফেরার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১০ কৃষক। এদের মধ্যে নয়জন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি। আশঙ্কাজনক হওয়ায় একজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শিকার কৃষকরা হলেন করিম মল্লিক (৫০), রমেজ শেখ (৪৮), গোপাল শেখ (৪৫), মালেক শেখ ( ৪০), নূরাল (৩৫), রিপন (৩০), বিল্লাল প্রামাণিক (২৮), রবিন প্রামাণিক (২২), সেলিম মণ্ডল (২১) ও সোহেল (২৩)।
শনিবার রাতে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে নূরালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুর পাঠানো হয়েছে। হাশেম শেখ ও মালেক মণ্ডল নামে দুই কৃষক সুস্থ আছেন। তাদের সবার বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ডহরপাঁচুরিয়া গ্রামে।
জানা গেছে, রবিন প্রামাণিক আর বিল্লাল প্রামাণিকের কাছে থাকা পেঁয়াজ বিক্রির লক্ষাধিক টাকা কৌশলে নিয়ে যায় প্রতারক চক্রটি।
হাসপাতালে ভর্তি কৃষকদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ১২ জন কৃষক দুটি ট্রাক ভাড়া করে ক্ষেতের পেঁয়াজ ভালো দামে বিক্রির জন্য ঢাকা নিয়ে আসে। শুক্রবার বিকেলে ডহর পাঁচুরিয়া গ্রাম থেকে ট্রাক দুটি ঢাকার শ্যাম বাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। রাত ৩টায় শ্যামবাজারে পৌঁছায় তাদের পেঁয়াজ বহনকারী ট্রাক। দুটি ট্রাকের প্রতিটিতে ছয়জন করে কৃষকের পেঁয়াজ ছিল। শনিবার সকালে এক হাজার টাকা মন দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে দুপুরে রাজবাড়ী ফেরার পথে গাবতলী থেকে সৌহার্দ্য পরিবহনে ১২ জন বাসে ওঠে। তাদের সবার কাছে এ সময় পেঁয়াজ বিক্রির ৫০ থেকে ৬০ হাজার করে টাকা ছিল। বাস ছাড়ার আগে গাবতলী থেকে আহত ১০ কৃষকই পেঁয়ারা, শসা ও বাদাম কিনে খান। পরে মানিকগঞ্জ এসে বাসের সুপারভাইজার ভাড়া নিতে এলে ১০ জনকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। তারপর অনেক ডাকাডাকির পরও তাদের জ্ঞান ফেরে না।
সুস্থ থাকা কৃষক মালেক মণ্ডল বলেন, আমরা সবাই গাবতলী থেকে পেঁয়ারা কিনি। কিন্তু আমি আর হাশেম পেঁয়ারা খাইনি। আমরা দু’জন বাদে সবাই খায়। রাত জাগা থাকায় বাস ছাড়লে আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। মানিকগঞ্জ আসার পর সুপারভাইজারের ডাকাডাকিতে আমরা দু’জন জেগে গেলেও ওরা আর জাগে না। তখন বুঝতে পারি আমরা অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়েছি। তখন বাসের ভেতর থেকেই গ্রামের সবাইকে মোবাইলে জানিয়ে দেই। রাজবাড়ী নেমে সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ড. অচিন্ত্য কুমার বলেন, রাজবাড়ীতে যারা আছেন তারা এখন আশঙ্কা মুক্ত। তবে সুস্থ হতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদৎ হোসেন জানান, আমি শুনেছি ১০ জন কৃষক অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়ে রাজবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি আছে।